বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। বাধার মুখে প্রধান বিচারপতির বাসভবনসংলগ্ন মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
গতকাল বেলা আড়াইটার পর রাজধানীর বিজয় নগরে শ্রম ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে যমুনা অভিমুখে যেতে থাকেন তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। বেলা ৩টায় মিছিলটি কাকরাইল মসজিদ মোড়ে এলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাতে বাধা দেয়। এরপর থেকে তারা সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ কারণে কাকরাইল মসজিদ থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালমুখী রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এছাড়া মৎস্য ভবন থেকে কাকরাইলমুখী সড়কে চলাচলকারী যানাহনও বাধাগ্রস্ত হয়। বেলা সোয়া ৩টায় বৃষ্টি শুরু হলেও অবস্থান ছাড়েননি পোশাক শ্রমিকরা। বৃষ্টিতে ভিজেই তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে দেখা যায়।
আন্দোলনে অংশ নেন আশুলিয়ার চেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড, গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের আটটি প্রতিষ্ঠান ও ডার্ড গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা।
বিক্ষোভরত শ্রমিকদের ভাষ্য, তারা গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের আটটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তাদের ১৪ মাস ধরে বেতন ও অন্যান্য পাওনা বকেয়া রয়েছে।
আজিজুর রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘মালিক পক্ষ আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। আমরা নয়দিন ধরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান করছি, কেউ আমাদের খবর নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আজ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে রওনা দিয়েছি। টাকা ছাড়া আমরা এ জায়গা থেকে যাব না।’
শ্রমিকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে কাকরাইলে অবস্থান নেন বামপন্থী কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। সেখানে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে দুই মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের আন্দোলনে পুলিশ বিভিন্ন সময়ে হামলা চালিয়েছে। পাওনা পরিশোধে মিটিংয়ের পর তারিখ দেয়া হয়, কিন্তু শ্রমিকরা বেতন পান না। এদের পাওনা পরিশোধে মালিক, শ্রমিক ও সরকারের যে ত্রিপক্ষীয় কমিটি হয়েছে, সেই কমিটি বারবার সিদ্ধান্ত নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন।
আমরা কোনো আশ্বাস চাই না। যতক্ষণ শ্রমিকরা তাদের শ্রম-ঘামের পাওনা পাবেন না, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।