আটকের সময় তাদের সঙ্গে থাকা কাজের জন্য নিয়ে আসা ঝুঁড়ি, কোদাল এবং টিফিনবাটিও জব্দ করেছে পুলিশ।
রোববার (১ জুন) কুষ্টিয়া শহরে আটক হন ওই দশ শ্রমিক।
তারা হলেন - কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া বাড়াদী গ্রামের মৃত আলম সর্দারের ছেলে সালাম সর্দার (৪৫), মৃত আজবার শেখের ছেলে আলতাফ শেখ (৩৫), মৃত আফজাল শেখের ছেলে সূর্য শেখ (৫৭), মৃত আফসার উদ্দিন খানের ছেলে আলম খান (৪৮), মৃত আইনুদ্দিনের ছেলে মোতালেব (৫৫), মৃত আলী হোসেনের ছেলে খোসবার ঘরামি (৫০), কালোয়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে ফরিদ ব্যাপারী (৪৫), কুমারখালী উপজেলার বানিয়াপাড়া বাড়াদী গ্রামের মৃত ফকরুদ্দিনের ছেলে সাইদুর রহমান (৫৫), হরিপুর এলাকার মৃত শাহাদাত মন্ডলের ছেলে নজিম উদ্দিন মন্ডল (৫৫), বোয়ালদহ মেছোপাড়া গ্রামের মৃত হানিফ সর্দ্দার ছেলে আব্দুল খালেক (৬৫)।
আজ সোমবার (০২ জুন) সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ আইনের নাশকতা মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠিয়েছে।
জানা যায়, ঝুড়ি, কোদাল এবং টিফিনবাটিতে খাবার নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে সাতসকালে কুষ্টিয়া শহরের ছয়রাস্তা মোড়ে এসে হাজির হন একদল শ্রমিক।
দৈনিক ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা চুক্তিতে তাদের সঙ্গে নিয়ে যান অনেকে। এভাবে শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন।
রোববার (১ জুন) সকালেও এমনটাই চিত্র ছিলো সেখানে।
মোটরসাইকেলে একজন এসে ১০ জন শ্রমিককে জনপ্রতি ৬০০ টাকা মজুরিতে তিন ট্রাক বালু সরানোর জন্য নিয়ে যায়।
কুষ্টিয়া পিটিআই রোডে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ির সামনে তাদের নিয়ে আসা হয়।
সেখানে আওয়ামী লীগের একটা ব্যানার দিয়ে ছবি তোলা হয় তাদের। পরে আওয়ামী লীগের লোকজন চলে গেলে পুলিশ গিয়ে জেল খাড়া মোড় এলাকা থেকে ওই দশজন শ্রমিককে আটক করে ঝুড়ি, কোদাল, থালা-বাটিসহ থানায় নিয়ে আসে।
যারা আটক হয়েছেন তারা সকলেই দিনমজুর। প্রতিদিন তারা সকালে কাজের সন্ধ্যানে কুষ্টিয়া ছয়রাস্তা মোড়ে আসেন।
তাদের স্বজনরা জানান, শ্রমিকরা জেল খাড়া মোড়ে কোদাল, ঝুঁড়ি নিয়ে বালু ফেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
এ সময় অপরদিক থেকে আওয়ামী লীগের একটি মিছিল শ্রমিকদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ দেখে মিছিলে থাকা লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা কোদাল, ঝুড়িসহ ওই ১০ জন শ্রমিক ধরেন আনেন পুলিশ।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, যাদেরকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছেন তারা দিনে আনে দিনে খান, কখনও কোনো রাজনৈতিক দলের কাজের সঙ্গে জড়িত নয়।
এদিকে শ্রমিক আটকের বিষটি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন ছয়রাস্তা মোড় থেকে ১০ জন শ্রমিককে ৬০০ টাকা হাজিরা চুক্তিতে কাজের জন্য ভাড়া করে নিয়ে যায়।
পরে তাদেরকে কাজ না দিয়ে আওয়ামী লীগের একটি ব্যানারের সামনে দাঁড়াতে বলে এবং তারা ব্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে মিছিল করার সময় তাদেরকে হাতেনাতে আটক করা হয়। তারা মিছিলের বিষয়টি স্বীকার করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ আইনের নাশকতা মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।