৪০ রোহিঙ্গাকে সমুদ্রে ফেলে দিলো ভারত

, প্রকাশ:17 মে 2025, 03:32 দুপুর
news-banner

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কয়েক ডজন (৪০) রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মিয়ানমারের কাছে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর।

শুক্রবার (১৬ মে) মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসঙ্ঘের এ সংস্থা জানিয়েছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে মিয়ানমারের কাছে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ থেকে ৪০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করার পর সমুদ্রে জোর করে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার অফিস বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আটক করে নয়াদিল্লি। তাদেরকে মিয়ানমারের সমুদ্র সীমান্তের কাছে ভারতীয় নৌবাহিনী সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে। শিশু, নারী ও বয়স্ক ব্যক্তিদেরসহ শরণার্থীরা সাঁতার কেটে তীরে উঠে এসেছে, তবে মিয়ানমারে তাদের অবস্থান এখনো অজানা।

শুক্রবার কয়েকজন রোহিঙ্গা শরণার্থী এপিকে জানান, তাদের পরিবারের সদস্যরা ৬ মে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হন। আটকদের মধ্যে ১৫ জন খ্রিস্টানও ছিলেন। ৮ মে তাদের একটি বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে ভারতীয় নৌবাহিনীর মাধ্যমে সমুদ্রে ফেলে দেয়া হয়।

দিলাওয়ার হুসেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আইনজীবী জানান, ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে একটি পিটিশন দায়ের করেছে, যাতে ভারত সরকারকে তাদের পরিবারদের দিল্লিতে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে ভারতের নৌবাহিনী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, এই রোহিঙ্গারা সবাই জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) নিবন্ধিত শরণার্থী ছিলেন। ৬ মে রাতে দিল্লির উত্তম নগর, বিকাশপুরি ও হাসতসাল এলাকা থেকে তাদের তুলে নেয়া হয়।

প্রথমে তাদের ইন্দরলোক ডিটেনশন সেন্টারে নেয়া হয়, এরপর ৮ মে একটি ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজে করে আন্দামান পৌঁছে দেয়া হয়। অভিযোগ, সেখান থেকে একটি নৌযানে করে আন্তর্জাতিক পানিসীমায় নিয়ে তাদের একে একে সমুদ্রে ফেলে দেয়া হয়।

জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী সংস্থার আইনজীবীরা জানান, আটক ব্যক্তিদের আইনের ২২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আদালতে পেশ করা হয়নি, যা ভারতের সংবিধান লঙ্ঘন করে।

ইউএনএইচসিআরের আইন কর্মকর্তা দিলোয়ার হোসাইন বলেন, তাদের সাথে ভয়ানক প্রতারণা করা হয়েছে। কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা বা আদালতে উপস্থাপনের ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি নারীদের ক্ষেত্রে কোনো স্পেশাল জুভেনাইল পুলিশ ইউনিটও (এমন একটি বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট, যেটি শুধু শিশুদের ১৮ বছরের নিচে, সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখভাল করার জন্য গঠিত হয়) ছিল না।

সূত্র : এপি

মুল্যবান মন্তব্য করুন