দিনের পর দিন যায়, মাস ফুরোয় তবে ফুরোয় না বাংলাদেশ দলের ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্বাস। প্রতি ম্যাচ শেষে একই কথা, একইভাবে দায় নেয়া। সংবাদ সম্মেলনগুলো হয়ে উঠেছে কপি-পেস্ট।
পারছি না, হচ্ছে না, শিখছি, ঘুরে দাঁড়াব। এই কথাগুলোই ঘুরেফিরে আসছে দেশের ক্রিকেটে। এসেছে গতরাতেও। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও হেরেছে টাইগাররা। এবার দলের আরো বেহাল দশা।
পাকিস্তানের দেয়া ২০১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৯ ওভারে মাত্র ১৪৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৫৭ রানে হারে লিটন দাসরা। একই সাথে হাতছাড়া করে সিরিজিও।
আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর পাকিস্তানের কাছেও সিরিজ হারা। টানা চার হারেও অবশ্য আশা হারাচ্ছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে এসে লিটন বলেন, ‘আমাদের আরো একটি সুযোগ আছে। এই মুহূর্তে আমাদের একসাথে বসে আলাপ করতে হবে কীভাবে আমরা শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি। কারণ, এটি পুরোপুরি মানসিকতার ব্যাপার।’
তবে দায়টা রাখলেন নিজেদের ওপর। ব্যাটারদের অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, ‘যে ভালো ব্যাটিং করে, তার উচিত ইনিংস এগিয়ে নেয়া। তার ১৩-১৪ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হবে। কিন্তু চতুর্থ ওভারের পর আর ভালো ব্যাটিং করিনি। টানা উইকেট পড়েছে।’
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে ৩ বল করেই চোটে পড়েন শরীফুল ইসলাম। পুরো ম্যাচে আর বল করতে পারেননি তিনি। নামেননি ব্যাটিংয়েও।
এই ঘটনাকেও বড় প্রভাবক হিসেবে বলছেন লিটন। তার বিষয়টা মোমেন্টাম ঘুরিয়ে দিয়েছে দাবি করে বলেন, ‘যখন শরীফুল চোটে পড়ল, তখন মোমেন্টাম পুরোপুরি ওদের দিকে চলে গেছে। কারণ, আমরা জানি, বোলিংয়ে আমাদের ঘাটতি আছে।’
অধিনায়ক লিটন বলেন, ‘এই উইকেটে ২০০ রান বা আমি যেকোনো রান তাড়ার জন্য ব্যাটিং করতে চাইব। কিন্তু ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা সেটি করতে পারিনি।’
একই সুর শোনা গেল ম্যাচের একমাত্র পারফর্মার তানজিম সাকিবের মুখেও। নয় নম্বরে নেমে ফিফটি গড়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়া এই পেসার ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘২০০ রান তাড়া করার মতোই। সমস্যাটা হলো আমরা ব্যাক টু ব্যাক উইকেট হারিয়ে ফেলি।’
তানজিম সাকিব বলেন, ‘আমি আমার টিমমেটদের ওপর অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস রাখি। আশা করছি, তারা পরের ম্যাচে কামব্যাক করবে। ব্যাটাররা আরো দায়িত্বশীল ব্যাটিং করলে এই উইকেটে ২০০ রান তাড়া করা সম্ভব।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ম্যাচ হেরে গেলেও দারুণ ব্যাটিং করেন তানজিম সাকিব। তার কল্যাণেই ৭৭ রানে ৭ উইকেটে হারানো বাংলাদেশ ১৪৪ পর্যন্ত পৌঁছায়। টি-টোয়েন্টি তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যা তার প্রথম ফিফটি।
ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ফিফটি পেয়েছেন। তবে এর আগে টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মাঝে সাকিবই প্রথম নয়ে নেমে ফিফটি পেয়েছেন।