লক্ষ্মীপুরে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় কাউছার আহমেদ মিলন (৬০) নামে জামায়াত নেতা নিহতের ঘটনায় বিএনপির ১২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (৮ জুন) রাতে নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বাদী হয়ে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সোহাগ হোসেনসহ বিএনপির ১২ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
অপরদিকে, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। বিকেলে সদর উপজেলার জকসিন বাজারে অভিরখীল দাখিল মাদরাসার সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে নেতা-কর্মীরা। পরে মিছিলটি বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাজারে সমাবেশ করে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে, এই ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান লিটন, সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান হারুন ও যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোফাজ্জল হোসেন রনিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে তাদের তদন্তের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। নিহতের পরিবার ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা কাউছারের মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে দায়ী করেছেন। তবে, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে স্থানীয় একটি ঘটনা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, ‘কাউছার আহমেদ নিহতের ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।’
বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার বাংগাখাঁ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের রাজিবপুর এলাকায় রিয়াজ হোসেন বাবলু ও সোহাগদের সঙ্গে মারামারি হয় জামায়াত নেতা কাউছারের ভাই আলতাফ হোসেন আরজুর। ঘটনার সময় কাউছারসহ তার পরিবারের চারজন আহত হন। পরে তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যায়। এরপর বিকেলে কাউছার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় মারা যান। স্বজনদের দাবি, রিয়াজসহ অন্যদের মারধরের কারণে কাউছার মারা গেছেন। নিহত কাউছার আহমেদ সদর উপজেলার রাজিবপুর এলাকার মৃত মমিন উল্যার ছেলে ও বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন জামায়াতের ওলামা বিভাগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, কাউছারের ভাতিজা দেড় মাস আগে এলাকায় একটি টিউবওয়েল চুরি করে। সে ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে টুকামিয়ার পুল এলাকায় রিয়াজ তাকে আটক করেন। খবর পেয়ে আরজু গিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। সে সময় উভয়ের মধ্যে মারামারি হয়। পরে উভয়পক্ষ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। পরে রিয়াজরা এ ঘটনায় সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।