তিন উপদেষ্টাকে বহিষ্কার করলে মিনিমাম স্বচ্ছতা আসবে। আর যদি বহিষ্কার করা না হয়, তাহলে এই সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ গণতন্ত্র পরিষদের উদ্যোগে বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণে দ্রুত নির্বাচন শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামি দলগুলো ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার পতন চেয়েছে একটি মাত্র কারণে, তা হচ্ছে দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি জাতীয় নির্বাচনের জন্য। এটা ছিল গত ১৫ বছরের লড়াই। সেই লড়াইয়ের পরে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। হাসিনার পতন মানে স্বৈরতন্ত্রের পতন।
তিনি বলেন, ‘হাসিনার পতন মানে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, গণতন্ত্র বিজয় লাভ করেছে। এখন সে গণতন্ত্র উত্তরণের দরকার, উত্তরণ মানে নির্বাচন। কিন্তু নির্বাচনের কথা বলাই যেন মনে হচ্ছে অপরাধ। বিএনপি স্পষ্ট করে যমুনায় গিয়ে বলে এসেছে, সরকারের স্বচ্ছতার জন্য যারা নতুন পার্টি করেছে, তাদের কোনো প্রতিনিধি এ সরকারে থাকতে পারবে না। দু’জনের কথা সরাসরি বলেছে। আর একজন আছে যে বাংলাদেশকে বিক্রি করতে চায়। মিডিয়াতে দেখলাম, পরকীয়ার কারণে স্বামী তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে, পরে স্বামী আত্মহত্যা করেছে, যার কারণে করেছে তিনি এই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন। এই কারণে ৩০ বছর আগে সে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে বিদেশ থেকে এনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিএনপি তাকেও বহিষ্কারের কথা বলেছে। এই তিনজনকে বহিষ্কার করলে মিনিমাম স্বচ্ছতা আসবে। আর যদি বহিষ্কার করা না হয়, তাহলে এই সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনি প্রমাণ করেছেন যে এনসিপি আপনার দল। আপনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ডেমোক্রাসির জন্য না। আপনি গণতন্ত্র বুঝেন না, এটা আমরা বুঝি। আপনি যদি ওই তিনজন উপদেষ্টাকে বহিষ্কার না করেন, তাহলে আমরা ধরে নিব, আপনি একটি দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনার অধীনে ভালো একটি নির্বাচন হবে, এটা বিশ্বাস করা আমাদের জন্য কঠিন।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচন খুব জরুরি, দেশে গণতন্ত্রের জন্য এই সরকারের স্বচ্ছতার জন্য দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে সন্দেহ দূর করেন। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করেন। তা না করলে দেশের যে পরিস্থিতি হবে, তার সম্পূর্ণ দায়ভার আপনাকে নিতে হবে। আমরা সরকারের পাশে আছি। আমরা আপনার পদত্যাগ চাই না। আপনি নাহিদের সাথে বসে নিজে নিজে পদত্যাগ চাইবেন, এসব ছেলেমানুষি আপনার দ্বারা মানায় না। আপনি দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যান, এটা আমরা প্রত্যাশা করি।
বাংলাদেশ গণতন্ত্র পরিষদের সভাপতি মোক্তার আখন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম প্রমুখ।