আগুন দিয়ে পুড়াই দিলো আনন্দ শোভাযাত্রার ‘হাসিনার প্রতিকৃতি’

, প্রকাশ:12 এপ্রিল 2025, 11:30 দুপুর
news-banner

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ আগুনে পুড়ে গেছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিষয়টি প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে। ওই আকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে। একইসাথে পায়রার অবয়বটাও পুড়ে গেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আগুনটা ফজরের নামাজের সময় লাগানো হয়েছে। আমরা এর পরেই খবর পাই। কিন্তু ফায়ারসার্ভিস আসতে আসতে ওটা পুরোটাই পুড়ে যায়। আগুনটা ইচ্ছে করেই লাগানো হয়েছে। তবে কে বা কারা করেছে তা জানা যায়নি৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এখানে রয়েছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আনুমানিক ভোর ৪ টা ৫০ মিনিটের দিকে চারুকলার গার্ডরা দেখেন ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি তৈরির স্থানে আগুন জ্বলছে। তারা গিয়ে দেখেন ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একইসাথে তার পাশে থাকা পায়রার অবয়বটাও পুড়ে গেছে। তারা পানি দিয়ে যতটুকু পেরেছে নেভানোর চেষ্টা করেছে এবং আমাদের জানিয়েছে। খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি।’

আগুন পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিগত কয়েকদিন যাবত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল। তবে আগুন পরিকল্পিত কি না সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। ভোর ৪টা পর্যন্ত শিক্ষকেরা কাজ করেছে। ফজরের নামাজের সময়টাতে এ ঘটনা ঘটেছে।’

কে বা কারা আগুন দিয়েছে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ‘এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা তদন্ত করে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।’

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, ভোরে আগুন লেগে এমনটি হয়েছে। দুটি মোটিফ ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি ও শান্তির পায়রা পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আমরা সকাল ১০টা দিকে এ বিষয়ে জরুরি সভায় বসবো। পরবর্তীতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতির মোটিফটি নতুন করে আবারো বানানো হবে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তীতে জানাতে পারবো।

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে আগুনটি পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে কিনা? এসব তৈরির সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরাও কিছু বলতে পারছেন না। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, সারারাত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল চারুকলায়। ভোরে কয়েকজন নামাজে গেলে আগুন লাগে এসব প্রতিকৃতিতে।

এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে সন্দেহ করছি না। ঘটনাস্থলে ছয়টি সিসি ক্যামেরা আছে। আমরা ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।

প্রক্টর বলেন, বিগত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল। বিষয়টি আমলে নিয়ে আমরা জোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু নামাজের সময়টাতে কিছুটা ফাঁকা পেয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা এটাও তদন্ত করে দেখছি আমাদের কোনো ঘাটতি আছে কি না।

মুল্যবান মন্তব্য করুন