তিব্বতের মালভূমিতে ‘বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ’ নির্মাণ করছে চীন: শঙ্কিত ভারত-বাংলাদেশ

আরিফুল ইসলাম , প্রকাশ:13 জুলাই 2025, 10:27 রাত
news-banner

তিব্বতের ইয়ারলুং সাংপো নদীর ওপর বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী বাঁধ নির্মাণ করছে চীন। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এটি বর্তমানের থ্রি গর্জেস ড্যামের তুলনায় তিনগুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে দাবি করা হচ্ছে।

চীনের এই 'সুপার ড্যাম' প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। কারণ ইয়ারলুং সাংপো নদীটি তিব্বত থেকে ভারতের অরুণাচল ও আসাম অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিলে বড় ধরনের বন্যা, আর শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকে রাখলে খরার আশঙ্কা করছে দুই দেশই।

তবে চীনের পানি মন্ত্রণালয় এবং হোহাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এই বাঁধ বরং পানির সুষম বণ্টনে সহায়ক হতে পারে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে নির্মিত দুটি বাঁধ—জ্যাংমু ও জিয়াচা—এর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে এবং বর্ষাকালে বন্যার চাপ কিছুটা কমেছে।

গবেষণায় আরও বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীর পানি ও তাপমাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে। হিমবাহ দ্রুত গলে যাচ্ছে, শীতকালে পানি খুব ঠান্ডা এবং গ্রীষ্মে বেশি গরম হয়ে উঠছে—যা নদীর মাছ ও জলজ প্রাণীর জীবনচক্রে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সুপার ড্যাম প্রকল্প ভারত ও বাংলাদেশের জন্য জলনীতিক ও পরিবেশগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বাঁধ সরাসরি দুই দেশের পানিপ্রবাহে প্রভাব ফেলবে। তাই দুই দেশকেই কৌশলী এবং প্রস্তুত থাকতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইয়ারলুং সাংপো নদী (ভারতে সিয়াং, বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র) শুধু পরিবেশগত নয়, কৌশলগত গুরুত্বেও গুরুত্বপূর্ণ। চীনের এই প্রকল্প আন্তর্জাতিক জলসম্পদ ব্যবস্থাপনায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

গবেষকরা আশা প্রকাশ করেছেন, এই ধরনের সমন্বিত গবেষণা ও তথ্য বিশ্লেষণ নদী ব্যবস্থাপনার টেকসই কৌশল নির্ধারণ এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তথ্যসূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

মুল্যবান মন্তব্য করুন