এদিকে, ম্যাডলিনে থাকা মানবাধিকারকর্মীরা বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আগে জানান, স্থানীয় সময় রোববার রাত ১টার কিছু পর তাদের জাহাজের দিকে চারটি স্পিডবোট এগিয়ে আসে। এরপর দুটো ড্রোন উড়ে এসে জাহাজের ওপর একটি সাদা রাসায়নিক স্প্রে করে, সেটি ঠিক কী তা তারা বুঝতে পারেননি। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রেটা থুনবার্গসহ জাহাজে থাকা সবাই হাত উঁচু করে বসে আছেন। এ সময় ইসরায়েলি সেনারা তাঁদের মুঠোফোনগুলো সাগরের পানিতে ছুঁড়ে ফেলার নির্দেশ দেন এবং তাঁরা সেটিই করেন। এ ভিডিওটির পর জাহাজ থেকে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পরে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজটি আশদোদ বন্দরে নেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনার আগে ম্যাডলিন জাহাজে বসেই একটি পূর্ব রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তায় গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, ‘আমার নাম গ্রেটা থুনবার্গ, আমি সুইডেন থেকে এসেছি। যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখেন, তবে বুঝবেন আমরা এখন আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী বা তাদের সমর্থক বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছি।’
এ সময় তিনি সুইডিশ সরকারকে আহ্বান জানান যেন তাদের মুক্তির জন্য ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়।
জাহাজটিতে থাকা ব্রাজিলের মানবাধিকারকর্মী থিয়াগো অ্যাভিলা একটি ভিডিওতে বলেন, ‘এটি ভিডিওটি যদি আপনি দেখেন, তাহলে বুঝবেন আমি এখন ইসরায়েল বা তাদের সহযোগী কোনো বাহিনীর হাতে বন্দী।’ তিনিও তাঁর সরকার ও অন্যান্য দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা এই জাহাজে থাকা কর্মীদের মুক্তি এবং গাজায় চলমান বর্বরতা বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তারা যেন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং গাজায় চলমান গণহত্যা ও অবরোধ বন্ধ করে।
ম্যাডলিন জাহাজে ১২ জন মানবাধিকারকর্মী আছেন। তাঁরা হলেন— সুইডেনের পরিবেশবিষয়ক আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপটিস্ট আন্দ্রে, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, ফ্রান্সের ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস ও ফ্রান্সের রিভা ভিয়া।
গত ১ জুন ইতালির সিসিলি কাতানিয়া শহর থেকে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন পরিচালিত এই জাহাজ—ম্যাডলিন।